Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মুজিববর্ষের অঙ্গীকার কৃষি হবে দুর্বার : সবার সম্মিলিত প্রয়াস

মুজিববর্ষের অঙ্গীকার কৃষি হবে দুর্বার : সবার সম্মিলিত প্রয়াস

কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামান

স্মরণকালের মধ্য ভয়াবহ করোনা সংকটের মুখোমুখি গোটা বিশ্ব। করোনার ভয়াল রাহুগ্রাসে বিশ্বের ধনী দরিদ্র সকল দেশের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ সংহার করে দোর্দÐ প্রতাপে এখন অব্দি বিশ্বব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস। এটার প্রতিকার প্রতিবিধানের কার্যকর উপায় হিসেবে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে দেশে কোভিড ১৯ এর প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হয়েছে।


করোনার প্রকোপে ইতোমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে এটার সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক  প্রভাব নিয়ে সচেতন মানুষ মাত্রেই উৎকণ্ঠিত। সংকটের মুখোমুখি রয়েছে আমাদের মতো উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের মানুষ। তবে করোনা নিয়ে  শুরুতে আমাদের দেশে জনগণের মধ্যে যতটা আতঙ্ক ও আশঙ্কা ছিল সেদিক দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক শীর্ষে রয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বিশে^র ধনাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী ২২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নিশ্চিত করেছে। একইসাথে আমেরিকার বøুমসবার্গ এর প্রতিবেদন অনুসারে করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবস্থান উপমহাদেশের মধ্যে প্রথম এবং সমগ্র বিশে^র মধ্যে ২০তম স্থানে।


“যারা যোগায় ক্ষুধার অন্ন, কৃষি হলো তাদের জন্য”। আদিকালের সেই খরপোশ কৃষি এখন বাণিজ্যিক কৃষিতে সুইচ করেছে। কৃষির আধুনিকায়ন হয়েছে, ফলে ফল, ফসল, ফুল, সবজি, খাদ্যশস্য, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য সম্পদের বিজ্ঞানসম্মত উৎপাদন কৌশল এখন আধুনিক কৃষির মূল অনুষঙ্গ হয়ে কৃষির উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। দেশ স্বাধীনের পরে সাড়ে ৭ কোটি জনসংখ্যার দেশে আবাদযোগ্য জমি ছিল ১ কোটি ৮৫ লাখ হেক্টর এবং মোট খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৯৫ লক্ষ মে.টন। দেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৭ কোটির ঘরে। আবাদযোগ্য জমি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮৫ লক্ষ হেক্টরে অথচ খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে চারগুণের কাছাকাছি; কোন কোন বছর সেটা চারগুণের বেশি অতিক্রম করেছে। তাই আমরা ধান, পাট, সবজি, পেয়ারা, আলু, আম চাষ মোট খাদ্য উৎপাদনে আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। নিত্যনতুন ফল ফসলের জাত উদ্ভাবনে রয়েছি বিশ^সেরা অবস্থানে। 

 
বোধবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এখন বেশ করে বুঝতে পারেন, স্বাধীন বাংলাদেশে কৃষির অভাবনীয় উন্নয়ন না হলে এ দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে আজ অনাহারে অর্ধাহারে কাটাতে হতো! বিশ্ববরেণ্য নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবদ্দশায় বলেছিলেন কৃষিই কৃষ্টি। বিখ্যাত ফরাসি দার্শনিক রুশে বলে গিয়েছেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও গৌরবমÐিত শিল্প হচ্ছে কৃষি। ঠিক একই ধরনের কৃষিবান্ধব ভাবধারা পোষণ করতেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ     মুজিবুর রহমান। তাঁর কৃষিভিত্তিক চিন্তা ছিল ব্যাপক। তাই তিনি তার জীবদ্দশায় এ দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নতির জন্য অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সেই কৃষিবান্ধব নীতির স্পষ্ট প্রতিফলন রেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার তার সব সরকারের শাসনামলেই। ফলে দেশের কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল সেক্টর আজ সমৃদ্ধশালী। যে সার সরবরাহ জটিলতার জন্য বিএনপি জামাত জোট সরকারের শাসনামলে ১৮ জন নিরীহ কৃষককে প্রাণ দিতে হয়েছিল, বর্তমান সরকার দফায় দফায় সারের মূল্য কমিয়ে কৃষকের দোরগোড়ায় সার সরবরাহ নিশ্চিত ও সহজলভ্য করেছেন।  কৃষি সেক্টরে এখন প্রণোদনা প্যাকেজসহ অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্পের ছড়াছড়ি। তাই তো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্তমান সরকার স্বীকৃতি পেয়েছে কৃষিবান্ধব সরকার হিসেবে।


বিজ্ঞানের অভাবনীয় উল্লম্ফনের এই ক্ষণে মানুষ আজতক বহুকিছু আবিষ্কার করে বিশ্ব মাতিয়ে ফেলেছে । সেসাথে মানুষ তার নিজের পুষ্টিকর খাবার নিজে আবিষ্কার করার চেষ্টা করছে। তাই পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের জন্য মানুষকে প্রতিনিয়ত কৃষির উপরেই নির্ভর করতে হয়। করোনা সংকট সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার কৃষির উৎপাদনের ধারা সচল রাখার কথা বলেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, করোনা সংকটকালে যেন এক ইঞ্চি জমিও পড়ে না থাকে । তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির পর কৃষিই হবে একমাত্র হাতিয়ার। শুধু এটাই বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেমে থাকেননি। কৃষি উৎপাদনের ধারা সচল রাখতে ৯ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণাসহ ৫ হাজার কোটি টাকার ৪% সুদে কৃষি ঋণ বিতরণ কার্যক্রম, দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে এক শতাংশের ১০০টি সবজি ও পুষ্টি বাগান স্থাপন করাসহ বহুমুখী কৃষি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করার জন্যে  ইতোমধ্যে ৫০-৭০% ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মাঝে কৃষিযন্ত্র সরবরাহের ৩০২০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প চালু হয়েছে। করোনা অতিমারির মধ্যে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করার জন্যে রাজস্ব খাতে ২০০ কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল এবং বিগত ২০২০-২১ সালের পেশকৃত বাজেটে কৃষি সেক্টরকে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।


সর্বাবস্থায় কৃষি উৎপাদনের ধারা সচল রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নির্দেশনা মোতাবেক কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে নানান ধরনের নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে। মাননীয়  কৃষিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার প্রথম ওয়েভের সংকটকালে বোরো ধান সংগ্রহ তদারক করতে একাধিকবার নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন; কৃষকের সাথে কৃষকের পাশে থেকে ধান কাটা উদ্বোধন করেন। করোনাকালে খাদ্য উৎপাদনের নীরব কারিগর কৃষকের সাথে ও পাশে থেকে সব সময় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও তাদের সংশ্লিষ্ট সকল সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীবাহিনী।


ঘোর অমানিশার মাঝেও আশা জাগানিয়া খবর হলো সদ্য সমাপ্ত বোরো মৌসুমে দেশব্যাপী ধানের বাম্পার ফলন জাতীয় লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে বিশ্ব দরবারে ধান উৎপাদনের দেশ হিসেবে চতুর্থ স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করতে সক্ষম হয়েছে। বোরো উৎপাদনের ধারায় আউশের ফলনও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে। তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উপর্যুপরি বন্যার কারণে আমন নবান্ন খ্যাত আমন ধান উৎপাদনে কিছুটা ফলন কম হলেও চলমান বোরো মৌসুমে সেটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কৃষি মন্ত্রণালয় ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠিান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। তদুপরি এখনো বাংলাদেশে ধানের যে মজুদ রয়েছে তাতে করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করলে ধান চালের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ার কথা নয়। এ বিষয়টিরও দেখভালের জন্য সদাশয় সরকারের কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় বেশ সোচ্চার রয়েছে।


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেশ করে জানেন, আমাদের উর্বর মাটি,  কৃষি উপযোগী প্রাকৃতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু তথা আমাদের সমৃদ্ধ কৃষিই পারে, বৈশ্বিক করোনা সংকটে ও মুক্তবাজার অর্থনীতির এইক্ষণে মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকতে। জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৪ শতাংশের কাছাকাছি হলেও মানুষকে ক্ষুধার অন্ন জোগান দেয়াসহ শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহে কৃষির গুরুত্ব অপার অপরিসীম। কৃষিতে আমাদের দেশের মতো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এ সময়ে বিশ্বের খুব কম দেশেই আছে। কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশে সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা এখন সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বের রোল মডেল! কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিতেও ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্যও সরকার কাজ করে যাচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে ১০টি অভীষ্ট এবং ১৬৯ লক্ষ্যমাত্রার অন্তর্গত ৩৩টি সূচকের সাথে আমাদের কৃষির সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষি উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করার কাজে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে চলেছে  কৃষি মন্ত্রণালয়।


সকল ক্রান্তিকাল ও পাথর সময়ের মুখোমুখি হয়েও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশা, বীরের জাতি বাঙালি সকল সংকট মোকাবেলা করে আবার ঘুরে দাঁড়াবে এবং সেভাবেই আমাদের কৃষি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। মুজিব জন্মশতবার্ষিকীকে সামনে রেখে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়,“মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, কৃষি হবে দুর্বার”। আমাদের কৃষি সেভাবেই এগিয়ে চলেছে।


জন্মগতভাবে আমাদের প্রত্যেকের মাঝে রয়েছে একটা স্বকীয় কৃষি সত্তা। আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে কৃষির সাথে জড়িত। পেশাগত কৃষি কাজের বাইরেও কেউ বসতবাড়িতে সবজি চাষ করেন, কেউ বাড়ির ছাদে বাগান করেন, বাড়িতে দুটো চারটে ফুলের টবের ব্যবস্থা রাখেন; সুতরাং  কোন মানুষই কৃষি সত্তার বাইরে নন। এতদ্ব্যতীত জীবন ধারণের জন্য প্রতিদিনের যে খাবারের দরকার হয় সেটা তো সেই কৃষির হাত ধরেই। সুতরাং মানুষ মাত্রেই কৃষির সাথে নিবিড় মন মিতালী।  তাঁদের যদি আমরা একটু বোঝাতে সক্ষম হই, তাহলে কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রতি ইঞ্চি জমির সদ্ব্যবহার সহজতর হবে। আমাদের প্রত্যেকের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মীদের সাথে কৃষকসহ প্রতিটি জনমানুষের নিবিড় মেলবন্ধন সরকারি কৃষি পরিষেবাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো।


সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় আমরা আসন্ন এই অনাকাক্সিক্ষত সংকটকে ঠিক কাটিয়ে উঠতে পারব। যুগে যুগে এই গ্রহে এমনসব সংকট মোকাবেলা করে শেষতক সৃষ্টির সেরাজীব মানুষই জয়ী হয়েছেন। এবারেও করুণাময়ের অশেষ রহমতে নিশ্চয় আমরাও সহসা জাতীয় ও বৈশ্বিক করোনা সংকটকে কাটিয়ে উঠতে পারব। তাই, আসুন  অহেতুক সমালোচনা নয়, হাতে হাত রেখে সম্মিলিতভাবে আমরা এই সংকট থেকে উত্তরণে ব্রতী  হই।

মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত), জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা), গাজীপুর। মোবাইল: ০১৭১১৮৮৪১৯১, ই-মেইল : akhtar62bd@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon